ঢাকা   শুক্রবার, ১০ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৬ পৌষ ১৪৩১

বিএনপি কি ভারতের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছে?

Daily Inqilab কামরুল হাসান দর্পণ

১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৬ এএম | আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৬ এএম

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনামলে বিএনপির নেতাকর্মীরা যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, দেশের ইতিহাসে আর কোনো দলকে এতটা ত্যাগ স্বীকার করতে দেখা যায়নি। শেখ হাসিনা বিএনপি নামে কোনো দল দেশে থাকুক তা চাননি। দলটিকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে এর চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ এমন কোনো শীর্ষ নেতা নেই, যাদের বিরুদ্ধে হামলা-মামলা, জেল-জুলুম, নির্যাতন করেননি। বিএনপির তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত সাংগঠনিক ভিত্তি উপড়ে ফেলার জন্য নেতাকর্মীদের খুন, গুম, অপহরণ, ঘরবাড়ি ছাড়া করা, গ্রেফতারসহ সব ধরনের প্রক্রিয়া চালিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। সে সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কথায় কথায় বলতেন, বিএনপির পরিণতি হবে মুসলিম লীগের মতো। একটি প্রতিষ্ঠিত ও জনসমর্থিত দলকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার এমন ভয়ংকর মানসিকতা পোষণ করতে আর কোনো সরকারকে দেখা যায়নি। এমনকি, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পতনের পরও তার দলকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার এমন দমন ও নিপীড়ন করা হয়নি। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং ভয়ংকর খুনি মানসিকতার, তা তার দেড় দশকের শাসনামলে দেশের মানুষ দেখেছে। তার সমস্ত রোষ ঢেলে বিএনপিকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিলেন। দেড় দশক ধরে হাসিনার গিলোটিনের নিচে থেকে দলটির নেতাকর্মীরা জীবন দিয়েছে, জেলে গেছে, দিনের পর দিন আদালতে দৌড়াতে দৌড়াতে জীবনের সোনালী সময় হারিয়েছে। তারপরও তারা বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীনতাকে ধারন করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করে গেছে।

দুই.
শেখ হাসিনা যে ভারতের খুঁটির জোরে বিএনপিকে নিঃশেষ করে দেয়ার প্রক্রিয়া চালিয়েছেন, তা সকলেরই জানা। ভারতের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শেখ হাসিনা বিনাভোট, রাতের ভোট এবং আমি-ডামির ভুয়া নির্বাচন করে দেড় দশক ক্ষমতায় ছিল। দেশের মানুষ দেখেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং নির্বাচনের আগে এসে কীভাবে বিনাভোটের নির্বাচন করতে হাসিনাকে সাহায্য করেছে। এটা ছিল, আমাদের গণতান্ত্রিক ধারাকে স্তব্ধ করে দিয়ে হাসিনাকে স্বৈরাচারি করে তোলার ভারতের প্রকাশ্য হস্তক্ষেপ। শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য হাসিনা ভারতের কাছে দেশের স্বাধীন সত্ত্বা বিকিয়ে দিয়েছিলেন। হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার বিনিময়ে ভারত যা চেয়েছে, হাসিনা আমাদের স্বাধীনতাকে অরক্ষিত করে তাই দিয়ে দিয়েছেন। মূলত দীর্ঘ দেড় দশক ধরে হাসিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ভারতের কাছে বন্ধক দিয়ে রেখেছিলেন। ভারতের করদ রাজ্যে পরিণত করেছিলেন। অলিখিতভাবে হাসিনা ছিলেন ভারতের কোনো অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মতো। সে সময় পশ্চিমবঙ্গে হাসিনা সফরে গেলে সেখানে তাকে ‘মুখ্যমন্ত্রী’ বলে অভিহিত করা হয়েছিল। এ নিয়ে সমালোচনা হলেও হাসিনা কোনো প্রতিবাদ করেননি। হাসিনার শাসনামলে ভারতের তৎকালীন সেনাপ্রধানসহ বিজেপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বছরের পর বছর ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বক্তব্য দিয়েছেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশ দখল করে নেয়া উচিৎ ছিল, দখল না করা ভুল ছিল, বাংলাদেশের একাংশ দখল করে হিন্দুদের পুনর্বাসন করতে হবে, এমন মন্তব্য করা হয়েছে। বিজেপি নেতা অমিত শাহ বাংলাদেশের জনগণকে ‘উইপোকা’র সাথে তুলনা করাসহ আরও অনেক হেয় ও অপমানজনক কথা বলেছেন। আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে ভারতের এমন তাচ্ছিল্য ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ নিয়ে শেখ হাসিনা টুঁ শব্দ করেননি। হাসিমুখে মেনে নিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের সাথে ভারতের সম্পর্ক স্বর্ণশিখরে পৌঁছেছে। হাসিনা শুধু ভারতের তাঁবেদারই ছিলেন না, পোষ্য ছিলেন। বাংলাদেশকে ভারতের করদরাজ্যে পরিণত করতে অনেক কিছুই হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহের নামে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন মেধাবী অফিসারকে হত্যা করা হয়েছে, সীমান্তে পাখির মতো গুলি করে বাংলাদেশিদের হত্যা করা হয়েছে। শিশু ফেলানিকে গুলি করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তথাকথিত জঙ্গী উত্থানের নাম করে বাংলাদেশের মুসলমানদের উপর নিপীড়-নির্যাতন এবং শাপলা চত্ত্বর হত্যাকা-ের মাধ্যমে আলেম-ওলামাদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার প্রক্রিয়া চালোনো হয়েছে। ভারত ট্রানজিটের নামে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে সেভেন সিস্টার্সে পণ্য ও মালামাল আনা-নেয়ার জন্য নামমাত্র শুল্কে করিডোর নিয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দর, নৌবন্দরসহ সড়ক, রেল ও নৌপথ ব্যবহারের সুবিধা নিয়েছে। বাংলাদেশের লাখ লাখ শিক্ষিত বেকারদের রেখে হাসিনা ভারতীয় নাগরিকদের কর্মসংস্থান করে দিয়েছে। বাংলাদেশকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্সের দেশে পরিণত করেছে। বিনিময়ে বাংলাদেশ কি পেয়েছে? কিছুই পায়নি। শুধু হাসিনা পেয়েছে ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি। হাসিনা এ গ্যারান্টি পেয়ে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার সবরকমের নিপীড়ন-নির্যাতন, খুন, গুম চালিয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা কি ভারতের এমন আচরণের কথা ভুলে গেছে? এ প্রশ্ন করছি গণঅভ্যুত্থানে হাসিনার পতন ও পলায়নের পর বিএনপিকে ভারতের দ্বারা প্রভাবিত হতে দেখে। হ্যাঁ, পট পরিবর্তনের পর বিএনপি কিছুদিন ভারতবিরোধী মনোভাব দেখিয়েছে। কলকাতা ও আগরতলায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ও উপকমিশনে উগ্র হিন্দুদের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় তারা ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে মিছিল ও সীমান্তের দিকে লংমার্চ করেছে। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে ভারতীয় চাদর ও পণ্য পোড়াতে দেখা গেছে। হাসিনা ক্ষমতায় থাকতেও এ কাজটি তিনি করেছেন। তবে গত কিছুদিন ধরে দলটির আচরণে ভারত প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয়।

তিন.
আমরা দেখেছি, ২০২৩ সালে বিএনপি যখন হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে একদফা কর্মসূচির অংশ হিসেবে দশটি বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করেছে, সেগুলোতে দলের নেতাকর্মী এবং হাজার হাজার সাধারণ মানুষ কীভাবে হাসিনাবাহিনীর শত বাধা উপেক্ষা করে অংশগ্রহণ করেছে। সমাবেশের আগে সব ধরনের যানবাহন বন্ধ করে দিলেও খুলনা, রাজশাহী, বরিশালসহ সবগুলো সমাবেশে যোগ দিতে দূর-দূরান্ত থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ মাইলের পর মাইল হেঁটে, কলার ভেলা, ট্রলারে সমাবেশে যোগ দিয়েছে। সমাবেশের আগের দিন তারা সড়কের পাশে, মার্কেটের করিডোরে রাত কাটিয়েছে। হাসিনাবাহিনীর গ্রেফতার ও নির্যাতন এড়াতে প্রচ- শীতে ধানখেতে, খড়ের গাদায় নেতাকর্মীদের ঘুমানোর ভিডিও এবং স্থিরচিত্র দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের লক্ষ্যে বিএনপির নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের এই ত্যাগ ও কষ্ট দেখে তখন মানুষের চোখে পানি এসেছে। কোনো দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের এমন ত্যাগের দৃশ্য দেশের ইতিহাসে দেখা যায়নি। তারা কেন এই ত্যাগ স্বীকার করেছে? লক্ষ্য কি ছিল? লক্ষ্য ছিল, ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন এবং ভারতের কাছে বন্ধক দেয়া স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। তারপরও বিএনপি একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভারতের কাছে ধর্ণা দিয়েছিল। তখনকার প্রেক্ষাপটে কৌশল হিসেবে ভারতকে ম্যানেজ করার জন্য দলটির শীর্ষ নেতারা বহুবার দেনদরবার করেছেন। ২০১৮ সালের ‘আমি-ডামি’ নির্বাচনের আগে দলটির একটি উচ্চপর্যায়ের দল ভারত সফর করেছিল শুধু সবদলের অংশগ্রহণে নির্বাচনটিকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য। ভারত কি বিএনপির এই উদ্যোগে সাড়া দিয়েছিল? দেয়নি। কারণ, সে বিএনপিকে তার ‘হোস্টাইল এনিমি’ হিসেবে বিবেচনা করে। বরং ২০২৩ সালে আওয়ামী লীগের তৎকালীণ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবুল মোমেন চট্টগ্রামে দুর্গাপূজার এক অনুষ্ঠানে অকপটে বলেছিলেন, আমি ভারতকে অনুরোধ করেছি, শেখ হাসিনাকে যাতে আবার ক্ষমতায় রাখতে ভারত সহযোগিতা করে। ভারত তার অনুরোধ রক্ষা করে ‘আমি-ডামি’র নির্বাচন করতে সহায়তা করেছে। আওয়ামী লীগের হয়ে সে যুক্তরাষ্ট্রকে ম্যানেজ করেছে। এমনকি, আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থী কোন আসনে নির্বাচন করবে, তাও সে ঠিক করে দিয়েছিল। এর অর্থ হচ্ছে, ভারতের কাছে বিএনপির কোনো মূল্যই নেই, ভবিষ্যতেও থাকবে না, এটা নিশ্চিত। সে আওয়ামী লীগের বাইরে কখনোই যাবে না। যদি যেত, তাহলে সে হাসিনাকে আশ্রয় দিত না। বিএনপিকে এই বাস্তবতা উপলব্ধি করতে হবে। তাকে বুঝতে হবে, ভারত তার মিত্র নয়। এটাও মনে রাখতে হবে, বিএনপির আজকের যে জনভিত্তি, তার মূলে রয়েছে, তার ভারতের আধিপত্যবিরোধী রাজনীতি। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বিএনপিকে যে অকুণ্ঠচিত্তে সমর্থন করে, তা তার এই নীতির কারণেই। দেশের মানুষ মনে করে, বিএনপির নেতৃত্বেই তারা ভারতের অন্যায় আচরণ এবং আধিপত্যবাদ প্রতিরোধ করতে পারে এবং পারবে। এ জন্যই তারা দলটির ওপর ভরসা রাখে। বিএনপির কি উচিৎ হবে, দেশের মানুষের ভারতবিরোধী এই মনোভাবের বাইরে গিয়ে রাজনীতি করা? উচিৎ হবে না। এই যে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, তার মূল লক্ষ্য ছিল, ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পাশাপাশি ভারতের আধিপত্যবাদের পতন। এ লক্ষ্য তো বিএনপির নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষেরও। এর বাইরে গিয়ে বিএনপি যদি ভারতের সাথে মাখামাখি কিংবা তোয়াজ করার নীতি অবলম্বন করে, তাহলে আগামী নির্বাচনে তার ক্ষমতায় যাওয়ার পথ কঠিন হয়ে যেতে পারে। দুঃখের বিষয়, গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপি যেভাবে ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল, তা এখন আর নেই। বিশেষ করে গত ডিসেম্বরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রির বাংলাদেশ সফরের পর থেকে বিএনপি যেন চুপ হয়ে গেছে। এতে জনমনে সন্দেহ জেগেছে, তার এ সফর কি ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংয়ের হস্তক্ষেপের মতো কিনা। কিংবা বাংলাদেশের আগামী রাজনীতির ধরন কেমন হবে ও ক্ষমতায় কে, কিভাবে আসবে তা ঠিক করে দেয়ার মতো কিনা। বিএনপি কি ভারতের সাথে কোনো বোঝাপড়ায় গেছে? যদি যায়, তাহলে এটি হবে বিএনপির সবচেয়ে বড় ভুল।

চার.
এখন জরিপ ছাড়াই বলা যায়, দেশের শতকরা নব্বই ভাগের বেশি মানুষ ভারতবিরোধী মনোভাব ধারন করে আছে। তাদের এ মনোভাব ইতিহাসের নিরিখেই গড়ে উঠেছে। বিএনপি যদি জনগণের এ মনোভাব উপেক্ষা করে ভারতের কোনো ধরনের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চলে, তাহলে তার পরিণতি আওয়ামী লীগের চেয়েও খারাপ হতে বাধ্য। আগামী নির্বাচনে যে, বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে, তা হোঁচট খেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বিশ্লেষকদের মতে, ভারত হাসিনাকে দেড় দশক ধরে আগলে রেখেছে ঠিকই, কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের শক্তির কাছে শেষ পর্যন্ত হাসিনা ও ভারতের আধিপত্যবাদের পতন হয়েছে। ভারত এ পতন ঠেকাতে পারেনি। হাসিনা ও তাকে লেজগুটিয়ে পালাতে হয়েছে। জনগণের প্রতিরোধের সামনে যে, কোনো পরাশক্তি দাঁড়াতে পারে না, তা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানই প্রমাণ করে দিয়েছে। এর বাইরে গিয়ে যদি বিএনপি কিছু করতে চায়, তবে সেটা হবে তার জন্য বুমেরাং। বিএনপিকে বাস্তবতা ও নতুন বাংলাদেশের মানুষের এই মনোভাব বুঝতে হবে। তাদের চিন্তা-ভাবনা ধারন করতে হবে। বিএনপিকে মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগ যেভাবে ভারতের দালালি করেছে, নতুন বাংলাদেশে আর কোনো দল যদি পরোক্ষ, প্রত্যক্ষ কিংবা তলেতলে ভারতের সাথে তোয়াজের সম্পর্ক গড়ে তোলে, তা জনগণ মানবে না। এটাও স্মরণে রাখা দরকার, মালদ্বীপের মতো ছোট জনসংখ্যার (৫ লাখ ২১ হাজার) দেশ যদি ভারতকে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারে, তবে বাংলাদেশ কেন ভারতের চোখে চোখ রেখে আপনার অবস্থান নিশ্চিত করতে পারবে না? বিএনপিকে জনগণের শক্তি বুঝতে হবে, এর সেই শক্তি ধারণ করতে হবে। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ভারতের আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত থাকতে যে নীতি অবলম্বন করেছিলেন বিএনপিকে সেই নীতিতে অটল থাকতে হবে। তার সাথে সম্পর্ক হবে, মর্যাদা ও সমস্বার্থের ভিত্তিতে, এর বাইরে নয়। তার আধিপত্যবাদকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। আমরা লক্ষ্য করছি, ভারত এখন পরিস্থিতি বুঝে সফট নীতি নিয়ে বিএনপির দিকে ঝুঁকেছে। বিএনপি যেন তার সেই পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছে। বিএনপিকে বুঝতে হবে, দুর্জনের ছলের অভাব নেই।

[email protected]


বিভাগ : সম্পাদকীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

সাতক্ষীরায় ইজিবাইকের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে কিশোরী নিহত

সাতক্ষীরায় ইজিবাইকের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে কিশোরী নিহত

সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী জনগণ, রাজনৈতিক দলের কোনো ভূমিকা নেই

সীমান্তে অতন্দ্র প্রহরী জনগণ, রাজনৈতিক দলের কোনো ভূমিকা নেই

চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস, মৃদু শৈত্য প্রবাহের কবলে গোট জেলা

চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস, মৃদু শৈত্য প্রবাহের কবলে গোট জেলা

খলনায়ক এআই, একধাক্কায় বেকার হতে চলেছেন ২ লাখ কর্মী

খলনায়ক এআই, একধাক্কায় বেকার হতে চলেছেন ২ লাখ কর্মী

মক্কায় বন্যার পানিতে ভেসে গেল গাড়ি, ৪ জনের মৃত্যু

মক্কায় বন্যার পানিতে ভেসে গেল গাড়ি, ৪ জনের মৃত্যু

পাকিস্তানে অস্ত্রের মুখে ১৭ সরকারি কর্মীকে অপহরণ

পাকিস্তানে অস্ত্রের মুখে ১৭ সরকারি কর্মীকে অপহরণ

যুক্তরাষ্ট্রে দাবানল নেভানোর কাজে এবার নামানো হলো কারাবন্দিদের

যুক্তরাষ্ট্রে দাবানল নেভানোর কাজে এবার নামানো হলো কারাবন্দিদের

পোল্যান্ড সীমান্তে বেলারুশের সেনা উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা

পোল্যান্ড সীমান্তে বেলারুশের সেনা উপস্থিতি নিয়ে উত্তেজনা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশে ১৩ কিলোমিটার যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশে ১৩ কিলোমিটার যানজট

আগুনে পুড়ে ছাই হলিউড তারকাদের বাড়ি-ঘর

আগুনে পুড়ে ছাই হলিউড তারকাদের বাড়ি-ঘর

লস অ্যাঞ্জেলেসের ভয়াবহ দাবানলে কমপক্ষে ১০ জন নিহত, সতর্কবার্তা জারি

লস অ্যাঞ্জেলেসের ভয়াবহ দাবানলে কমপক্ষে ১০ জন নিহত, সতর্কবার্তা জারি

লাকসামে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা, মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নিহত

লাকসামে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা, মোটরসাইকেলের ২ আরোহী নিহত

মালালা ইউসুফজাই পাকিস্তানে মেয়েদের শিক্ষার সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন

মালালা ইউসুফজাই পাকিস্তানে মেয়েদের শিক্ষার সম্মেলনে বক্তব্য দেবেন

হলুদ রঙে সেজেছে ক্ষেত

হলুদ রঙে সেজেছে ক্ষেত

গোপালগঞ্জে মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই স্কুল ছাত্র নিহত

গোপালগঞ্জে মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুই স্কুল ছাত্র নিহত

অধিনায়কত্ব উপভোগ করছেন সোহান

অধিনায়কত্ব উপভোগ করছেন সোহান

ইসরায়েলের দখলকৃত সিরিয়ায় সাংবাদিক ও আইনজীবী নির্যাতনের অভিযোগ

ইসরায়েলের দখলকৃত সিরিয়ায় সাংবাদিক ও আইনজীবী নির্যাতনের অভিযোগ

উত্তরা ‌থানা থেকে পালানো সাবেক ওসিকে ধরতে চলছে যৌথ অভিযান

উত্তরা ‌থানা থেকে পালানো সাবেক ওসিকে ধরতে চলছে যৌথ অভিযান

মাস্কের সঙ্গে জার্মান ফার-রাইট নেত্রীর ৭৪ মিনিটের লাইভ চ্যাটে সাক্ষাৎকার

মাস্কের সঙ্গে জার্মান ফার-রাইট নেত্রীর ৭৪ মিনিটের লাইভ চ্যাটে সাক্ষাৎকার

তারাকান্দায় হ্যান্ডট্রলী, সিএনজি ও অটোরিক্সার ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত-৫

তারাকান্দায় হ্যান্ডট্রলী, সিএনজি ও অটোরিক্সার ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত-৫